আমাদের জীবন পরম আনন্দময় যখন পরিবারের প্রয়োজনীয় সব আর্থিক চাহিদা যেমন বিয়ে, সন্তানের পড়াশোনা, সন্তানের এবং বাবা-মায়ের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা/সুরক্ষা, নিজের বাড়ি, পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সব কিছুই হয় নির্বিঘ্ন। বিপত্তি ঘটে যখন আমরা অনাকাংখিত পরিস্থিতি যেমন-পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যাক্তির চাকুরিচ্যুত, ব্যবসায় ধ্বস, দুর্ঘটনায় অংগহানী এমনকি মৃত্যুর সম্মুখিন হই। এবং অনকাংখিত ঝুকি থেকে পারিবারিক জীবনে অন্ধকার নেমে আসা থেকে আমাদের সুরক্ষা দেয় জীবন বীমা। যাতে আমাদের পারিবারিক ভবিষ্যৎ জীবন হয় নিশ্চিত। একটি বীমা কোম্পানিকে চুক্তি অনুযায়ী নিদির্ষ্ট পরিমানে প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে এই নিরাপত্তা পাওয়া যায়।

বীমা করলে নিম্নোক্ত সুবিধাদি পাওয়া যায়।

  • বীমা করলে সঞ্চয় হয়।
  • বীমা করলে ঝুঁকির তারিখ থেকে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে বীমা গ্রহীতার মৃত্যুবরণ করলে তার নমিনী অর্থিক ক্ষতিপূরণের টাকা পায়।
  • বীমার টাকা আয়কর মুক্ত।
  • বীমা করলে আয় কর রেয়াত পাওয়া যায়।

জীবন বীমা কতোগুলো সুনির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করে সম্পন্ন হয়।
যেমন:

  • বীমা প্রতিনিধির মাধ্যমে কিংবা সম্ভাব্য বীমা গ্রহীতা কর্তৃক বীমা করার প্রস্তাব উত্থাপন।
  • প্রস্তাব পর্যালোচনা বা বিবেচনা।
  • ডাক্তারী পরীক্ষা নিরীক্ষা ও চিকিৎসা কর্তৃক রিপোর্ট যাচাই করণ।
  • বীমা প্রতিনিধির রিপোর্ট ও প্রস্তাবকারীর ব্যাক্তিগত তথ্য যাচাই।
  • বয়স প্রমানপত্র যেমন এন আই ডি, জন্মনিবন্ধন।
  • প্রস্তাপপত্র বিবেচনা ও বর্জন।
  • প্রস্তাব গ্রহন ও প্রিমিয়াম বির্ধারণ।
  • প্রথম প্রিমিয়াম জমার রশিদ ইস্যু ও ঝুকি গ্রহন।
  • বীমা দলিল অথবা পাশ বই প্রদান।
  • মেয়াদ পূর্তিতে ঘোষিত বোনাসসহ দাবী পরিশোধ পরিকল্পভেদে সারভাইবাল বেনিফিট (যদি থাকে)।

বীমা প্রিমিয়াম বলতে বীমা যোগ্য ঝুঁকির বিপরীতে বীমাকারী কর্তৃক গ্রহনকৃত একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থকে বুঝায়। জীবন বীমার ক্ষেত্রে বীমা পলিসির পরিকল্প এবং মেয়াদ অনুযায়ী নির্ধারিত বাৎসরিক প্রিমিয়াম প্রদান করতে হয়। অর্থ্যাৎ একজন বীমা গ্রহীতা বীমা কোম্পানিকে নির্ধারিত হারে নির্দিষ্ট সময় পর পর নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত অথবা এককালিন যে অর্থ প্রদান করে তাই বীমা প্রিমিয়াম। প্রিমিয়ামের কিস্তির পরিমান নির্ভর করে বীমা গ্রহীতার বয়স, বীমার মেয়াদ এবং সুবিধাসমূহের উপর। পরিকল্প অনুযায়ী গ্রাহক তার সুবিধামত বার্ষিক, ষান্মাসিক, ত্রৈমাসিক এমনকি মাসিক হারে প্রিমিয়াম প্রদান করে থাকে।

একটি বীমা পলিসির অধীনে বীমা কোম্পানি গ্রহীতাকে সর্বমোট যে পরিমান অর্থ দেয়ার নিশ্চয়তা দেয়, তাই হল মোট বীমা অংক (Sum Assured)। অন্য কথায় মোট বীমা অংক হল বীমা কোম্পানি কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত অর্থ যা নির্ধারিত ঘটনা সংঘটিত হলে বীমা গ্রহীতাকে দেয়া হয়।

একচ্যুয়ারী কর্তৃক নির্ধারিত বয়স অনুযায়ী প্রতি হাজার টাকা বীমা অংকের জন্য যে প্রিমিয়াম হার নির্ধারন করা থাকে তার সঙ্গে বীমা অংক গুন করে প্রিমিয়ামের হার নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বয়স ও মেয়াদ অনুযায়ী প্রিমিয়ামের হার * বীমা অংক = বার্ষিক প্রিমিয়াম।

বীমা গ্রাহকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বীমা কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট বা পরিকল্প তৈরি করে থাকে যা বীমা পরিকল্প নামে পরিচিত।
যেমন:

  • সঞ্চয়ী মেয়াদী বীমা।
  • তিন, চার বা পাঁচ কিস্তি বীমা।
  • শিশু সুরক্ষা বীমা।
  • হজ্জ্ব বীমা।
  • এক কিস্তি বীমা।
  • স্বাস্থ্য বীমা।
  • পেনশন বীমা ইত্যাদি।

টার্ম ইনস্যুরেন্স পলিসি বিভিন্ন মেয়াদের হয়ে থাকে। বীমা পলিসি চলাকালিন সময়ে বীমা গ্রাহকের মৃত্যু ঘটলে তার মনোনীতক বীমার শর্ত মোতাবেক বীমা অঙ্কের সমপরিমাণ অর্থ মৃত্যু দাবী হিসেবে পাবে। কিন্তু বীমা গ্রাহকের মৃত্যু না হলে বীমা পলিসির মেয়াদান্তে কোন অর্থ পাবে না।

জীবন বীমা চুক্তি হল বীমা গ্রহীতা ও বীমা কোম্পানির মধ্যে একটি চুক্তি (Contract) যার মাধ্যমে বীমা গ্রাহক নির্দিষ্ট পরিমানে প্রিমিয়াম প্রদানের প্রতিদানে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বা মৃত্যুতে বীমা কোম্পানির কাছ থেকে তার মনোনীতক নির্দিষ্ট পরিমানে বীমাংক পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি পেয়ে থাকে।

বীমা প্রতিষ্ঠানের কর্মতৎপরতায় বীমা গ্রহীতাগণ বীমাপত্র ক্রয়ের জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেন এবং বীমা করার প্রস্তাবনা ফরম সংগ্রহ করেন। বীমাগ্রহীতার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও পেশাগত বীমা চুক্তি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জানতে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন সন্নিবেশিত হয়েছে বীমা প্রস্তাব ফরমে যা বীমার KYC ফরম। KYC ফরমটি সঠিকভাবে পূরণপূর্বক একজন সম্ভাব্য বীমাগ্রহীতা এজেন্টের মাধ্যমে বা স্বয়ং বীমা গ্রাহক হওয়ার জন্য যে প্রস্তাবনা করে থাকেন, তাকে বীমা প্রস্তাব বলা হয়।

একজন সম্ভাব্য বীমা গ্রাহককে বীমা চুক্তি সম্পন্ন করতে হলে যেসব তথ্য ও কাগজপত্র দিতে হয় তা হল।

  • বীমা গ্রহীতার বয়স ও বয়সের প্রমান পত্র।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা।
  • পেশা।
  • আয় ও আয়ের উৎস।
  • পারিবারিক ইতিহাস।
  • স্বাস্থগত অবস্থা ও শারীরিক গঠন।
  • নির্ধারিত পরিকল্প ও মেয়াদ।
  • ব্যাক্তিগত তথ্য।
  • বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা।
  • নমীনি বা মনোনীতক।

বীমা দাবী বলতে বিমাক্রিত ব্যাক্তি বা তার পক্ষে নমিনী বীমা পলিসির শর্তানুসারে কোন লস বা ক্ষতির সম্মুখীন হলে বিমাকারীর নিকট এ সকল ক্ষতি পূরণের জন্য যে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ বা আবেদন করে তাকে বুঝায়। বীমা দাবীর আবেদনের সাথে সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্রাদি অবশ্যই দাখিল করতে হবে। লাইফ বিমাকারীর মেয়াদ উত্তীর্ণ, সারেন্ডার বীমা দাবী পলিসির শর্ত মোতাবেক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিমাকারী কর্তৃক নিষ্পত্তি হবে।

লাইফ বিমাকারী গ্রাহক কর্তৃক সাধারনত প্রিমিয়াম দেয় তারিখের মধ্যে জমা না করলে পলিসি তামাদিতে রূপান্তরিত হয়। তবে দেয় তারিখের পর ৩০ দিন সময়কে বীমাকারী অনুগ্রহকাল হিসেবে বিবেচনা করে। উক্ত অনুগ্রহকাল অতিক্রান্ত হওয়ার পরই বিমাকারী পলিসির তামাদি গণনা করে থাকে। তামাদির ফলে গ্রাহকের আর্থিক নিশ্চয়তা রহিত হয়ে যায়, বীমাটি পরিশোধিত মূল্য অর্জন করে, গ্রাহকের আর্থিক ক্ষতি হয় এবং গ্রাহকের মৃত্যুতে দাবী দেয়া সম্ভব হয় না।

রি-ইনস্যুরেন্স বা পুনঃবীমা হচ্ছে বীমার বীমা। কোম্পানীর সামর্থের মধ্যে বীমা অঙ্কের ঝুঁকি রেখে অতিরিক্ত বীমা অঙ্কের ঝুঁকি নির্দিষ্ট হারে প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে অন্য কোম্পানীর নিকট স্থানান্তর করা । এক কথায় বীমার ঝুঁকি স্থানান্তর ই হচ্ছে পুনঃবীমা বা রি-ইনস্যুরেন্স । পুনঃবীমায় শুধুমাত্র মৃত্যুতে বীমাকৃত অর্থ পাওয়া যায় ।
রি-ইনস্যুরেন্স বা পুনঃবীমার সুবিধা সমূহঃ
  • অতিরিক্ত ঝুঁকি মোকাবলো করা যায়।
  • যে কোন পরিমাণ বীমা অঙ্কের ঝুঁকি গ্রহন করা যায় ।
  • স্বল্প পরিমাণ প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে অধিক পরিমাণ বীমা অঙ্কের ঝুঁকি গ্রহন করা যায় ।

প্রথমে অভিযোগ বিষয়ে প্রমাণাদি সংশ্লিষ্ট বীমাকারীর ঠিকানায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক/মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর দাখিল করবে। যদি ব্যবস্থাপনা পরিচালক/মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগ বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সমাধান না করে তবে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রদত্ত অভিযোগের কপি ও প্রমাণাদিসহ নিম্নোক্ত ঠিকানায় দাখিল করবে।

মাননীয় চেয়ারম্যান,
 বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ
 সাধারণ বীমা টাওয়ার (৯ম তলা), ৩৭/এ দিলকুশা বা/এ, ঢাকা-১০০০।

প্রয়োজনে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ওয়েব সাইটে রক্ষিত নির্দিষ্ট অভিযোগ বক্সে দাখিল আপনার অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন। অভিযোগ দাখিলের পর কর্তৃপক্ষ বীমা আইনের বিধান মোতাবেক যথাযথ নিষ্পত্তি করবে।

প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিঃ এর বিভিন্ন পরিকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মেনু বার-এর Insurance Plans এ মাউস রাখুন।

অথবা ভিজিট করুনঃ https://www.protectivelife.com.bd/#product